এ ডেথ্ ইন দ্য গান্জ.......
কঙ্কনা সেনশর্মা-র প্রথম পরিচালিত ছবি। পৃথিবী-র যে প্রান্তের মানুষ কঙ্কনা-কে চেনেন না (if any).....সত্যি বলছি বিশ্বাস করানো মুশকিল ! কঙ্কনাকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, ''কোন বিখ্যাত ব্যক্তিকে তিনি ইতিহাসের পাতা থেকে ফিরিয়ে আনতে চাইবেন?" ....উত্তরটা কঠিন হলেও ওর জবাব ছিল অনবদ্য.....''সত্যজিত রায়"। আর সত্যজিত রায় যদি সত্যি ফিরে আসতেন কঙ্কনা নিঃসন্দেহে একটা বড় পিঠ-চাপড়ানি প্রত্যাশা করতে পারতেন, ''অরণ্যের দিনরাত্রি''-র সেই স্রষ্টার কাছ থেকে। ঋতুপর্ণ পরবর্তী প্রজন্মের দুঁদে পরিচালকদের বৃত্তে একলাফেই উঠে এলেন আপনি।ঘাড়ের কাছে আপনার ফেলা নিঃশ্বাস নিঃসন্দেহে অনুভব করছেন সৃজিত, কৌশিক প্রমুখেরা।
A Death in the Gunj...বর্ষশেষের এক ছুটির গল্প। তাতেও আবার মৃত্যুর নীলচে কালো-রঙ!! মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েই ছবির যাত্রা শুরু..... ম্যাকলাক্সিগঞ্জের মর্গ থেকে নীল অ্যাম্বাসাডার-র ডিকিতে...এক মৃতদেহকে ঢোকানোর সমস্যা নিয়ে। বাকিটুকু ফ্লাশব্যাক। ১, ২, করে ৭ টা দিন পিছিয়ে গিয়ে.... কি কি হয়েছিল বক্সি পরিবারে সেই ছুটির অবসরে । নন্দন বক্সি তার স্ত্রী বনি, কন্যা তানি, মাসতুতো ভাই শ্যামল (শুটু), বন্ধু ব্রায়ানকে নিয়ে আসেন বাবা-মা ( ও.পি ও অনুপমা বক্সী)-র কাছে। শহর থেকে দূরে শীতের কুয়াশাবৃত জঙ্গলে অলস-সময়ে ঘেরা এই ম্যাকলাক্সিগঞ্জ । অনিবার্য ভাবেই যেন বার-বার ফিরে আসে এক নিঃসঙ্গতা আর অসহায়তার মূর্তরূপ নিয়ে ।
'শুটু' এই ছবির কেন্দ্রবিন্দু....সদ্য পিতৃহারা....এক মেধাবী ছাত্র। বছর ২৩-র কোঠায় পৌঁছলেও শুটু-র কোমলমনে ছেলেমানুষী বাসা ছাড়েনি। তানি-ই তার একমাত্র প্রকৃত সঙ্গী। ডায়েরীর পাতা খুলে যাকে ছেলেমানুষীর শরিক করা যায় অবলীলায় ।
ম্যাগনিফাইং গ্লাসের নজরে ধরা ভবলীলাসাঙ্গ হওয়া ক্ষুদ্রকীটকে সমাধিস্থ করে ফুল দেওয়া থেকে প্রার্থনা বাণী উচ্চারণ যার সঙ্গে করা যায়। একারণেই কি কোনো কবি বলেছিলেন......বড়ো যদি হতে চাও ছোটো হও আগে ।।!! ??
'শুটু' এই ছবির কেন্দ্রবিন্দু....সদ্য পিতৃহারা....এক মেধাবী ছাত্র। বছর ২৩-র কোঠায় পৌঁছলেও শুটু-র কোমলমনে ছেলেমানুষী বাসা ছাড়েনি। তানি-ই তার একমাত্র প্রকৃত সঙ্গী। ডায়েরীর পাতা খুলে যাকে ছেলেমানুষীর শরিক করা যায় অবলীলায় ।
ম্যাগনিফাইং গ্লাসের নজরে ধরা ভবলীলাসাঙ্গ হওয়া ক্ষুদ্রকীটকে সমাধিস্থ করে ফুল দেওয়া থেকে প্রার্থনা বাণী উচ্চারণ যার সঙ্গে করা যায়। একারণেই কি কোনো কবি বলেছিলেন......বড়ো যদি হতে চাও ছোটো হও আগে ।।!! ??
ঠিক বিপরীতে আমাদের চির পরিচিত আাপাদমস্তক সভ্যতার মুখোশে লুকোনো বর্বর নির্লজ্জ সমাজ (পড়ুন পিতৃতান্ত্রিক সমাজ )। এখানে কোমল মনের পিতৃহারা সন্তান কেন তার বাবার গায়ের গন্ধমাখা শোয়াটার পড়ে ঘুড়ে বেড়ায় তার মনের খবর শুনতে কেউ আকুল নন। সহানুভূতিহীন, যান্ত্রিক, আত্মগর্বে গর্বিত এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষেই ....বোধহীন ও বিজয়ীমানুষদের নির্লজ্জ উল্লাস !!!
জঙ্গলের ঝিঁঝিঁর ডাক, আঁধার রাত, মোমবাতি আর প্লানচেট......এক অদভুত গায়ে কাঁটা দেওয়া পরিস্থিতির জন্ম দেয়। তার মধ্যেও চলতে থাকে শুটুর ওপর পীড়ন। যাকে সবাই মিলে খোড়াক বানানো যায়। যাকে চাকরের মত হুকুম করা যায়।গাড়ি চালানোর ভুলে ছোট ভাইজির সামনে টেনে থাপ্পড় মারা যায় !!!! এই হল আমাদের তথাকথিত সুভদ্র সমাজ। প্রতিমুহুর্তে যেখানে মৃত্যু হচ্ছে মনুষ্যত্বের। কঙ্কণাকে অভিনন্দন জানাই ..........এই ছবি একটা ঠাঁটিয়ে থাপ্পড় ঐ নির্ল্লজ্জ সমাজের গালে। এছবি দেখা মানে আয়নায় নিজের মুখ দেখা !!!
No comments:
Post a Comment